গতকাল বুধবার সরেজমিনে লাকসাম পৌরসভার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ঘুরে জানা যায় ও দেখা যায়, ডাকাতিয়া নদী বিধৌত পীর মাশায়েখ গাজী সাহেব ও সাধক পুরুষ ঘোষাইয়ের পূন্যভূমি ইতিহাস খ্যাত নারী শিক্ষার অগ্রদূত নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী স্মৃতি বিজড়িত লাকসাম উপজেলা। দীর্ঘদিন থেকে দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক শহর হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করছে। দেশের বৃহত্তর রেলওয়ে জংশন এখানে অবস্থিত। একসময় জনমনে প্রবাদ ছিল ‘কত লাকসাম কত বাতি’ কালের বিবর্তনে ১৯৮৪ইং সালে লাকসাম পৌরসভা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বর্তমানে ৯টি ওয়ার্ডে ১৯.৪২ কিঃমিঃ এলাকায় নিয়ে ইহা বৃহত্তম কুমিল্লা জেলার একটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। এখানে প্রায় লক্ষাধিক নাগরিকের বসবাস। এখানে অনেক ফ্লাওয়ার মিল, তৈলের মিল, সিগারেট ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন ধরনের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠান বিদ্যমান। কিন্তু বর্তমানে লাকসাম পৌরসভার প্রায় সবগুলো জনগুরুত্বপূর্ণ সড়কের মধ্যে চলছে হাটের বেচাকেনার কাজ। এর ফলে সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজট। এ কারণে সড়কে সব ধরনের যানবাহন ঘণ্টার পর ঘণ্টা এক জায়গাতেই দাঁড়িয়ে থাকছে।
যানজটে আটকা পড়ে দুর্ভোগের শিকার যাত্রী আবদুল হালিম বলেন, ‘আমাদের দুর্ভোগ দেখার কেউ নেই। যারা হাটের ইজারা নিয়েছে তারাই সড়ক দখল করে বাজার বসাইছে। সেখান থেকে নিয়মিত টোল আদায়ও করছে। জনগণের দুর্ভোগে তাদের কিছু আসে-যায় না।’ লাকসাম পৌরসভার বাসিন্দা জাহিদুল ইসলাম বলেন, পৌরসভার শৃঙ্খলা ফেরাতে এবং নাগরিকদের পরিপূর্ণ সেবা প্রদান করতে কর্তৃপক্ষ চোখে পড়ার মতো কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করছে না। তিনি বলেন একদিকে সড়কের ওপর বাজার, অন্যদিকে ব্যাটারি চালিত অটো রিক্সার যন্ত্রণায় অতিষ্ঠ লাকসাম পৌরবাসী। আমরা এর স্থায়ী সমাধান চাই। এ বিষয়ে লাকসামে কর্মরত মিডিয়াকর্মী সাংবাদিক আব্দুর রহিমের সাথে কথা বললে তিনি জানান, লাকসাম পৌরসভার সড়কে হাট-বাজার ও যানজটের জন্য দায়ী হিসাবে দেখছেন লাকসাম পৌর কর্তৃপক্ষের আন্তরিকতাকে। পাশাপাশি ছিন্নমূল হকারদের পরিপূর্ণভাবে পুনর্বাসন করতে পারলেই সড়কে যানজট ও হাটবাজার মুক্ত করা সম্ভব।
লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও লাকসাম পৌরসভার প্রশাসক কাউছার হামিদ বলেন, লাকসাম পৌরসভার সড়কগুলোতে অবৈধভাবে বসা হাট-বাজারগুলো উচ্ছেদের জন্য বনিক সমিতির নেতৃবৃন্দ, প্রেসক্লাব নেতৃবৃন্দ ও ইজারাদারদের সাথে নিয়ে আমাদের নিয়মিত অভিযান চলছে। আমরা চলে আসার পর যদি কোন ব্যবসায়ী পুনরায় সড়কে বসে, সেটাতো আর আমরা সমাধান করতে পারবোনা। তিনি বলেন- ‘সংশ্লিষ্ট হাটের ইজারাদারদের সঙ্গে কথা বলে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা চলছে। সর্বোপরি কথা হলো- লাকসাম পৌরসভা আমাদের সকলের শহর, সকল নাগরিক মিলে আমরা এর শৃঙ্খলা ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখতে হবে।